বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিশেষ প্রতিবেদন

নোংরা ও অব্যবস্থাপনায় ভরা পর্যটন শহর কক্সবাজার

বিশেষ প্রতিবেদক
৩০ জানুয়ারি ২০২২

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের কারণেই কক্সবাজার নামটা মানুষের মুখে মুখে, পছন্দের তালিকায়ও শীর্ষে। এখানকার পর্যটন, লবণ, কৃষি, মৎস্য, শুঁটকি, চিংড়ি, কাঁকড়া ও শ্রমনির্ভর অর্থনীতি দেশের রাজস্ব খাতে রাখছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার অবদান। কিন্তু সে অর্থে উন্নয়ন হয়নি হলুদ ফুলের প্রাচীন রাজ্য ‘পালংকি’তে। এটি কক্সবাজারের প্রাচীন নাম।

২২২ বছর আগে ১৭৯৯ সালে সৈকততীরের স্বাস্থ্যকর স্থানে ছোট একটি মাছের বাজার বসিয়েছিলেন ইংরেজ সুপারিনটেনডেন্ট ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স। পরে তাঁর নামেই বাজারটির নামকরণ হয় ‘কক্সবাজার’।

এটি এখন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) গত ডিসেম্বরের এক জরিপ বলছে, দেশের প্রতি ১০০ জন পর্যটকের ১৭ জন যান কক্সবাজারে। জনপ্রিয়তায় কক্সবাজারের পরে হয়েছে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি ও সুন্দরবন।

মানুষ যে পর্যটনকেন্দ্রটিকে পছন্দের শীর্ষে রেখেছে, সেটি গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। রয়েছে অব্যবস্থাপনাও। ভ্রমণ ও নিজের চাকরিস্থলের ব্যবসায়িক সম্মেলন আয়োজন করতে নিয়মিত কক্সবাজারে যান কামরুল আহসান। তিনি বলেন, ‘এত নোংরা ও অব্যবস্থাপনায় ভরা পর্যটন শহর আমি আর দেখিনি। অথচ ব্যয় অত্যন্ত বেশি। মানুষ কক্সবাজারে যায় আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলে।’

গোড়ার কথা ও বর্তমান হাল
১৭৫৭ সালের কথা। তখন সাগরের পানি থেকে লবণ উৎপাদিত হতো। ১৭৬৫ সাল পর্যন্ত লবণ চাষের প্রতি আগ্রহী ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। শুরু হয় ব্রিটিশ বেনিয়াদের বিনিয়োগ। তারা গড়ে তোলে লবণ ব্যবসার বণিক সমিতি।

১৮৭৯ সালে সেনাঘাঁটির শহর কক্সবাজারকে মহকুমা ঘোষণা করে ব্রিটিশরা। তখন আধা বর্গমাইল এলাকাজুড়ে ছিল ‘কক্সবাজার মিউনিসিপ্যালিটি’, জনসংখ্যা ছিল হাজারখানেক। ১৯২৬ সাল পর্যন্ত মিউনিসিপ্যালিটি চলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি দিয়ে। ১৯৫৯ সালে পাকিস্তান সরকার মিউনিসিপ্যালিটিকে টাউন কমিটিতে রূপান্তর করে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার টাউন কমিটি বিলুপ্ত করে কক্সবাজারকে পৌরসভায় উন্নীত করে। এখন কক্সবাজার পৌরসভার আয়তন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ বর্গমাইলে। লোকসংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ।

শহরের প্রবীণ শিক্ষক এম এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, একটা সময় কক্সবাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে লোকজনের চলাচলের সুবিধার্থে কুপিবাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হতো। শহরজুড়ে ঘরবাড়ি ছিল ৩০-৪০টি। কুপিবাতির পরিবর্তন আসে ১৯৫৭ সালের দিকে। তখন জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

ইটপাথরের ঘিঞ্জি শহর
কক্সবাজারে লোকসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তেমনি বেড়ে চলেছে অপরিকল্পিত বহুতল ভবন। সমুদ্রতীর কলাতলীর দুই বর্গকিলোমিটার এলাকায় গত এক দশকে নির্মিত হয়েছে পাঁচ শতাধিক আবাসিক হোটেল, গেস্টহাউসসহ অন্তত ৮০০ বহুতল ভবন। অধিকাংশ ভবনের উচ্চতা ৫ থেকে ১৪ তলা।

গত ৩০ বছরে পৌর শহরে নির্মিত হয়েছে আরও প্রায় চার হাজার বহুতল ভবন। সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার ভবন নিয়ে কক্সবাজার যেন ইটপাথরের এক ঘিঞ্জি শহর। প্রতিবছর সৈকত ভ্রমণে আসেন অন্তত ৩০ লাখ পর্যটক।

সৈকত শহরের মানুষ এখন কেমন আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে শতভাগ মানুষের উত্তর হবে, ‘মোটেও ভালো নেই।’ কারণ, শহরজুড়ে চলছে উন্নয়নের খোঁড়াখুঁড়ি। যানজট-জলাবদ্ধতায় নাকাল পৌরবাসী। পাহাড়নিধন, সৈকতের বেলাভূমি ও বাঁকখালী নদী দখল করে চলছে ভবন-অবকাঠামো নির্মাণ, প্যারাবন উজাড়—সব মিলিয়ে নাজুক পরিস্থিতি কক্সবাজারের।

সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর মানবিক সেবায় নিয়োজিত জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ দেড় শতাধিক বেসরকারি সংস্থার অন্তত ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবস্থানও এই সৈকত শহরে। কয়েক দিনের ছুটিতে সৈকতে যখন একসঙ্গে চার-পাঁচ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটে, তখন কক্সবাজারের কান্না বাড়ে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিও লাগামহীন।

৪০ বছর আগে দেখা সৈকত শহরের স্মৃতিকথা তুলে ধরে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সেই কক্সবাজার এখন আর নেই। ইটপাথরের দালানকোঠা বানিয়ে কক্সবাজারকে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে, কোনোটাই পরিকল্পিতভাবে হয়নি।

শহরজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি
শহরের ১৭ ফুট প্রস্থের পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রধান সড়কটি তৈরি হয়েছিল ৫৫ বছর আগে পাকিস্তান আমলে। সেটির আর উন্নয়ন হয়নি। এক বছর আগে সড়কটি চার লেনে প্রশস্তকরণ, দুই পাশে নালা নির্মাণ প্রকল্প শুরু করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। তিন বছর সময়সীমার কাজটি দুই বছরের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ডিসেম্বর নাগাদ শেষ করার কথা।

অন্যদিকে প্রধান সড়কের দুই পাশে ২০টির বেশি উপসড়কে ৩২ কিলোমিটারের সড়ক উন্নয়ন ও নালা নির্মাণের কাজ চালাচ্ছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। কাজ শেষ হবে আগামী জুন মাসে। এতে শহরজুড়ে একসঙ্গে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি আর নালা প্রশস্তকরণের কাজে দুর্ভোগ বাড়ছে মানুষের। সামান্য বৃষ্টি হলে সড়কগুলোর ওপর জমে কাদার স্তর। তখন মানুষের হাঁটাচলাও কষ্টকর হয়ে ওঠে।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কক্সবাজারে এখন প্রায় ৬০০ কোটি টাকায় ৩৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ এবং সড়কের দুই পাশে ৭০ কিলোমিটারের মতো নালা নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। সড়কের দুই পাশে স্থাপিত হবে ল্যাম্পপোস্ট।

অরক্ষিত সৈকত
পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে কক্সবাজার সৈকত। প্রধান আকর্ষণ সমুদ্রের পানিতে নেমে লোনাজলে শরীর ভেজানো আর বিকেলে বালুচরে দাঁড়িয়ে পশ্চিমাকাশে অস্তাচলে যাওয়া সূর্যাস্ত উপভোগ করা। বিগত ৫০ বছরেও ১২০ কিলোমিটার সৈকতের কোথাও নিরাপদ গোসলের ব্যবস্থা হয়নি।

কেন হয়নি জানতে চাইলে ‘কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলন’–এর সাধারণ সম্পাদক আয়াছুর রহমান বলেন, এর কারণ পরিকল্পনার অভাব। সমুদ্রসৈকত ঘিরে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তৈরি হলেও সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ৫০০ মিটার সৈকতে জাল দিয়ে ঘিরে ‘সুইমিংজোন’ তৈরি হয়নি। হলে এত মৃত্যু দেখতে হতো না।

গত ১৭ বছরে সমুদ্রে গোসলে নেমে ১২২ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, সৈকতে সৃষ্ট গুপ্তখাল কিংবা চোরাবালিতে আটকা পড়ে পর্যটকের মৃত্যু হয়। গুপ্তখাল থেকে উদ্ধারে ডুবুরিও নেই।

লবণ, মৎস্য ও শুঁটকিতে জীবন
কক্সবাজার উপকূলের ৫০ হাজার একরের বেশি মাঠে গত মৌসুমে উৎপাদিত হয়েছিল ১৯ লাখ মেট্রিক টনের বেশি লবণ। আর এ লবণ দিয়েই পূরণ হয় দেশের বার্ষিক জাতীয় চাহিদা। লবণের জাতীয় চাহিদা ১৮ লাখ ৪৮ হাজার মেট্রিক টন। জেলার ৪৪ হাজার প্রান্তিক চাষিসহ লবণ উৎপাদন ও বিপণনে জড়িতপাঁচ লাখ মানুষ। শতভাগ মাঠে আধুনিক পদ্ধতিতে ‘পলিথিন প্রযুক্তি’তে লবণ উৎপাদন সম্ভব হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিপুল লবণ বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব হতো।

পৌরসভার নাজিরাটেক, কুতুবদিয়াপাড়াসহ আশপাশের ১৮টি গ্রামে শুঁটকি উৎপাদনের মহাল আছে প্রায় ৭০০টি। ৭০ হাজারের বেশি শ্রমজীবী মানুষ মহালগুলোতে প্রতি মৌসুমে উৎপাদন করেন ৩০০ কোটি টাকার বেশি শুঁটকি। ৬ হাজার ট্রলারে ইলিশসহ সামুদ্রিক নানা প্রজাতির মাছ আহরণ করেন অন্তত ৯৮ হাজার জেলে। আর মাছ আহরণ ও শুঁটকি উৎপাদন এবং বিপণনে জড়িত ১৫ লাখ মানুষ। মহেশখালীর মিষ্টি পান এবং টেকনাফের লাল সুপারির কদর বিশ্বব্যাপী।

সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও খেলাধুলা কমেছে
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেই কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরি (শহীদ দৌলত ময়দান) হয়ে যেত সাংস্কৃতিক কর্মীদের মিলনমেলা। নাচ-গান, কবিতা ও নাটকের মহড়ায় মুখর থাকত চারপাশ। কিন্তু সেই দিন এখন আর নেই। আগের তুলনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন বাড়লেও কর্মকাণ্ড ঝিমিয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধরে রাখা রাখাইন সম্প্রদায়ের নৃত্যদলও বিলুপ্তির পথে।

জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সত্যপ্রিয় চৌধুরী বলেন, ২৫ বছর আগে সাংস্কৃতিক অঙ্গন ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এখন তার ছিটেফোঁটাও নেই। এর কারণ সংস্কৃতিকর্মীদের অর্থনৈতিক দৈন্যদশা। অন্য কারণ, অচল পাবলিক লাইব্রেরি।

খেলাধুলার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। ২০ বছর আগে কক্সবাজারে নিয়মিত স্কুল ও ক্লাব ফুটবল এবং স্কুল ক্রিকেট, ক্লাব ক্রিকেটসহ নানা খেলাধুলার আয়োজন হতো। শহরের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম ছিল খেলাধুলার কেন্দ্রবিন্দু। এখানে খেলেই জাতীয় পর্যায়ে খেলেছেন খোরশেদ আলম, মাসুদ, বিপ্লবসহ অনেকে। কালের পরিক্রমায় শহরে স্টেডিয়ামের সংখ্যা বাড়লেও খেলাধুলা সীমিত হয়ে পড়েছে।

শহরের প্রাণকেন্দ্রে ১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এখনো সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। ১৯৬২ সালে শহরতলির লিংক রোড এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় কক্সবাজার সরকারি কলেজ।

এক দশকে জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়লেও শিক্ষার হার তেমন বাড়েনি। বর্তমানে জেলায় শিক্ষার হার ৩৯ দশমিক ৩০ শতাংশ। ১০ বছর আগে ছিল ৩৭ দশমিক ৬০ শতাংশ।

স্বাস্থ্য খাতে উন্নতি
২৫০ শয্যার কক্সবাজার সদর হাসপাতাল হচ্ছে জেলার ২৫ লাখ মানুষের ভরসাস্থল। হাসপাতালে প্রতিদিন সেবা নেন ৯০০ জনের বেশি রোগী। হাসপাতালে ভর্তি থাকেন গড়ে ৫৮০ জন। চিকিৎসক রয়েছেন ৭৬ জন। হাসপাতালটি করোনাসহ সব ধরনের চিকিৎসায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। হাসপাতালে এখন ১০ শয্যার আইসিইউ, ৮ শয্যার এইচডিইউসহ ১১৯ জন রোগীর পৃথক চারটি করোনা ইউনিট, অত্যাধুনিক জরুরি বিভাগ চালু রয়েছে। দুই বছর আগেও সংকটাপন্ন রোগীদের চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম কিংবা ঢাকায় দৌড়ঝাঁপ করতে হতো।

এখন চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম থেকেও বহু রোগী এই হাসপাতালে আসেন জানিয়ে সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারের পাশাপাশি জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর, আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাসহ (আইওএম) ব্যক্তিবিশেষের আর্থিক সহযোগিতায় হাসপাতালটি স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। ৫০০ শয্যার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে হাসপাতালটি চালু হলে চিকিৎসাক্ষেত্রে মানুষের অপ্রাপ্তি থাকবে না।

শহরে একটি চক্ষু হাসপাতাল এবং ৯টি বেসরকারি হাসপাতাল আছে।

পরিকল্পিত শহরের পথে
ভুতুড়ে পরিবেশে এত দিন ডুবে ছিল শহরের ঐতিহ্যবাহী লালদীঘি, গোলদীঘি ও নাপিতা দীঘি। পানি ছিল ব্যবহারের অনুপযোগী। দিঘি তিনটি দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় করে দিয়েছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পাঁচটি দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য তৈরি হওয়ায় বেড়েছে শহরের মর্যাদা।

কউকের পরিকল্পনায় আছে ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, পর্যটনকেন্দ্রিক আবাসিক, বাণিজ্যিক, বিনোদন, শিল্প, শিক্ষা, আবাসন জোন প্রতিষ্ঠা, দেশি-বিদেশি পর্যটক টানতে সৈকতসংলগ্ন এলাকায় ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, বিনোদন ও সেবামূলক সুযোগ সৃষ্টি এবং সিনেপ্লেক্সসংবলিত অত্যাধুনিক থিমপার্ক নির্মাণ ইত্যাদি।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ, গভীর সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পসহ জেলায় ৬৯টি মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকার কাজ চলছে। কয়েক বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজগুলো সম্পন্ন হলে কক্সবাজারের চেহারা পাল্টে যাবে।

‘এখনো সুযোগ আছে’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কক্সবাজারে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক যান। এই পর্যটনকেন্দ্রের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা দরকার।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নগর–পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, কক্সবাজারে গেলে যেটা মনে হয় তা হলো, সেখানে কোনো পরিকল্পনার ছাপ নেই। তিনি বলেন, সমুদ্রসৈকতটি অনেক বড়। এখনো সব জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা গড়ে ওঠেনি। তাই সম্প্রসারিত অংশ পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার সুযোগ এখনো আছে।

বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে ওয়ালটন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, সন্তানদের নিয়ে পর্যটন কেন্দ্রে অভিভাবক

আপনার মতামত লিখুন